"একটি আলোর কণা পেলে লক্ষ প্রদীপ জ্বলে, একটী মানুষ, মানুষ হলে বিশ্ব ভূবন টলেঃ। শিক্ষা এমন পরশমনি, যার ছোঁয়া একজনকে ভাল ছাত্র হওয়ার আগে নৈতিক ও মানবিক বোধসম্পন্ন ভাল মানুষ হিসেবে তৈরী করে। এটা ছাত্রের নিজস্ব অর্জন, যা তার জীবন মান উন্নত করে। সকল নাগরিকের সক্রিয় অংশগ্রহণে যেমন দেশের উন্নয়ন সাধিত হয়, তেমনি একটি বিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে শিক্ষক -শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক এই ত্রিমুখী সহযোগিতা প্রয়োজন।
নিরলস চেষ্টা, অধ্যাবসায়, সহপাঠ কার্যক্রমে আজ এই প্রতিষ্ঠানের বহু ছাত্রছাত্রী দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে উচ্চপদে নিয়োজিত আছে। মুক্তিযুদ্বের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নিরলস পরিশ্রম করে ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষার মান উন্নয়নে সহায়তা করে আসছেন। তাদের এই সহযোগিতার হাত আরো বর্ধিত হোক এবং এই গুনী শিক্ষকবৃন্দের স্পর্শে লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ এর সাফল্যের ধারাবাহিকরার ব্যাপকতা আরো বৃদ্ধি পাক, আমরা সেই কামনা করি।
স্বনামধন্য এই বিদ্যাপীঠ হতে শিক্ষা গ্রহণ করে বিশ্বের বুকে নেতৃত্ব দিচ্ছে অনেক শিক্ষার্থী। সেই সব স্বনামধন্য সাবেক শিক্ষার্থী কর্তৃক ৬০ বছর পূর্তি পুনর্মিলন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। জেনে খুবই পুলকিত ও গর্ববোধ করছি। এই মহতী কাজটি যারা আয়োজন করেছেন, সেই আয়োজক কমিটির প্রত্যেককে আমার পক্ষ থেকে রইলো শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
অতিতের মজবুত ভিতের উপর প্রতিষ্ঠিত লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ আজ খুলনা শহরের জ্ঞান পিপাসু শিখার্থীদের গর্বের তীর্থস্থান। আজকের এই সার্থকতার সবতুটু অতিতের গুনি শিক্ষকদের কর্মফল যা আজ আমরা উপভোগ করছি। তাই ষাট বছর পূর্তিতে তাদের প্রতি রইল শ্রদ্ধা আর অফুরন্ত ভালবাসা। আজকের আমরা একদিন অতিত হবো। আগামির শিক্ষকবৃন্দ আমাদের এই ভালবাসার প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বের মানচিত্রে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। সেই ভবিষ্যৎ শিক্ষকবৃন্দকে আমাদের পক্ষ থেকে জানিয়ে গেলাম হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসার অর্ঘ্য। হে বন্ধু যদি কখনও স্মৃতির পাতা উল্টাতে গিয়ে আমাদের দেখা পাও, ক্ষমা করো আমাদের অপরাধ। একটু ভালবেসে স্রষ্টার কাছে আমাদের মুক্তির জন্য প্রার্থনা রইল মহাকালের বিন্দুসম সময়ে পরিচয় হয়ে গেল এক্স লায়ন্স স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে। অনেকেই আমার বয়সে অনেক বড়। অতিত কে কাছে পেতে, সেই ছোট বেলায় ফিরে যেতে পুনর্মিলন অনুষ্ঠান আয়োজন করতে যাচ্ছে। তাদের এই আবেগ আর আনন্দে আমিও আনন্দিত আর অভিভূত। লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের সকল প্রকার উন্নয়নের অংশিদার হতে চায় তারা এটা জানতে পেরে আমি গর্বিত না হয়ে পারছিনা। এতবড় প্রতিষ্ঠিত এসোসিয়েসনের একত্রিত শক্তি যদি এই বিদ্যাপীঠের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে তবে এর সমকক্ষ প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া ভার। শুধু একটূ আবদার এই গরীব মেধাবী শিক্ষার্ধীদের শিক্ষা গ্রহণের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার হাত যেন সর্বদা উদার দেখি। এলামনাই এসোসিয়েসনের মহতি উদ্যোগকে স্বাগত জানাই,
চলতি বছর পথচলার ৬০ বছর অতিক্রম করেছে লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ, খুলনা। লায়ন্স ইংলিশ স্কুল নামে যাত্রা শুরু করে দীর্ঘ ছয় দশকের পথচলায় এ বিদ্যাপীঠ অতীতের সাফল্যধারাকে অব্যাহত রেখে চলেছে। বর্তমানে লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ নামে সুনামের সঙ্গে সবার কাছে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গৌরবের পথচলায় এ বিদ্যাপীঠের প্রাক্তন-বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অভিভাবকদের অবদান অনস্বীকার্য। তাদের সবাইকে জানাই আমার অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
আমরা লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, আমাদের বিদ্যাপীঠের গৌরবগাঁথাকে সমুন্নত রাখতে ও এগিয়ে নিতে এবং প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনীর জন্য হীরক জয়ন্তী উৎসব উদযাপনের যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। আশা করি, উৎসবে সামিল হয়ে সবাই সবার প্রিয় বিদ্যাপীঠের গৌরব গাঁথাকে আরো বেশি মহিমান্বিত করবে।
এ বিদ্যাপীঠের সাথে আমাদের বন্ধন শৈশবের। এ বিদ্যাপীঠের সঙ্গে আমাদের পথচলা কখনো বিয়োজন হবার নয়। আমাদের পুরনো সম্পর্কগুলো আজও আমলিন রাখতে এই বিদ্যাপীঠ প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখে চলেছে। আমাদের বদ্ধন আরো সুদৃঢ় করতে ৬০ বছর পূর্তি উৎসব অত্যন্ত ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে বলে আমার কাছে প্রতীয়মান। আমার বিশ্বাস উৎসবে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণকে সাড়া দিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসবে আমাদের প্রাণপ্রিয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
হীরক জয়ন্তী উৎসবকে সাফল্যমন্ডিত করে তুলতে নিরলস পরিশ্রম করেছে এ বিদ্যাপীঠেরই প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও বর্তমান শিক্ষকবৃন্দ। আমি আমার এই সহকর্মীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ভালবাসা নিবেদন করছি। এছাড়া লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এর যেসব সদস্যবৃন্দ নানাভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাদের প্রতিও আমার অন্তঃস্থল থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
২০০৭ ও ২০০৯ সাল এবং ২০১৪ সালে সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের সফল ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দীর্ঘ প্রায় আট বছর পর হীরক জয়ন্তী উৎসব আয়োজন করে নিজ স্কুলের প্রতি আমরা আমাদের একাগ্রতা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে সক্ষম হয়েছি বলে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
সদ্য ঘটিত লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আরো শক্তিশালী সংগঠনে রুপ নিয়ে আমাদের সবার এ বিদ্যাপীঠের সুনাম অর্জনে গুরুত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সংগঠনের যথার্থতাকেও মহিমান্বিত করবে বলে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। আশা করি, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা আমাদের লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজকে আরো এগিয়ে নিতে সক্ষম হবো।